শনিবার-১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ-২৭শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ-১২ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি

আইনজীবী ছাড়াই দেশের সর্বোচ্চ আদালতে দাঁড়ানো ফ্যাশন হয়ে গেছে : আপিল বিভাগ

বাংলাদেশ হাইকোর্ট। ফাইল ছবি।
বাংলাদেশ হাইকোর্ট। ফাইল ছবি।

ডেস্ক নিউজ : আপিল বিভাগ মন্তব্য করেন, ‘ভার্চুয়াল আদালতের সুযোগ নিয়ে আইনজীবী ছাড়াই একের পর এক বিচার প্রার্থীর দেশের সর্বোচ্চ আদালতে সরাসরি দাঁড়ানো ফ্যাশন হয়ে গেছে’।

১ নভেম্বর (সোমবার) বেশ কয়েকজন বিচারপ্রার্থী সরাসরি আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে মামলার নিষ্পত্তির আবেদন করলে আদালত এ মন্তব্য করেন।

সকালে আপিল বিভাগের বিচার কাজ শুরু হলে প্রথমেই দুই নারী বিচারপ্রার্থী দাঁড়িয়ে তাদের চাকরি সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি করতে আবেদন করেন। মানবিক দৃষ্টি দিয়ে আদালতের কাছে বিচার প্রার্থনা করেন।

তখন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আমাদের আইন মাফিক চলতে হবে। মানবিক আবেদন করবেন সরকারের কাছে। আমরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবো না। আমরা দেখবো আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে। মানবিক দৃষ্টিতে দেখবে সরকার। মানবিক এতটুকুই করতে পারবো মামলাটা তাড়াতাড়ি শুনবো। পরে আগামীকাল তাদের মামলাটি শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দেন।

ওই দুই নারীর আবেদনের পরই আরেকজন বিচারপ্রার্থী দাঁড়ান তার আবেদন নিয়ে। তিনি নিজেকে বেকার যুবক দাবি করে বলেন, আমি বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরির জন্য দরখাস্ত করেছিলাম। সেই মামলায় হাইকোর্ট থেকে রায় পেয়েছি। মামলাটি আপিল বিভাগে পেন্ডিং আছে। কিন্তু রেলওয়ে আমাদের নিয়োগ দিচ্ছে না।

এটা দেখে প্রধান বিচারপতি বলেন, এটা তো মহা মুশকিল। আপনার আইনজীবী কই? এ সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, চেম্বার আদালতে আবেদন না দিয়ে আপিলে চলে আসছেন কেন? একটা ফ্যাশন শুরু হয়ে গেছে আইনজীবী ছাড়া কোর্টে এসে দাঁড়িয়ে যাওয়া।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনার আইনজীবী কে? জবাবে ওই বিচারপ্রার্থী বলেন, পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু। তখন বিচারপতি ইমান আলী বলেন, আপনার আইনজীবী থাকতে আপনি এখানে দাড়াঁতে পারেন না।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনার মামলার অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড যিনি আছেন তাকে দিয়ে আবেদন দেন।

এরপর আরেকজন আদালতের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমি মসজিদের মুয়াজ্জিন। আমি খুবই গরিব মানুষ। আমি মানুষের যাকাত ফেতরা নিয়ে খাই। স্যার আমার মামালাটা বন্ধ হয়ে রয়েছে। যদি দয়া করে একটু দেখতেন।

একের পর এক এভাবে আইনজীবী ছাড়া সরাসরি কোর্টে দাঁড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এরপর থেকে যেসব আইনজীবীদের ক্লায়েন্ট সরাসরি কোর্টে এসে দাঁড়াবে, আমরা তার সনদ বাতিল করে দেবো। আগামীকাল থেকে যারা দাঁড়াবে তাদের আইনজীবী থাকলে তাদের সনদ আমরা পাঁচজন মিলে বাতিল করে দেবো।

আপনার আইনজীবী আছে কি না আদালতের এমন প্রশ্নের জবাবে ওই বিচারপ্রার্থী বলেন, উকিল আছে। অনেক টাকা চায়। তখন আদালত বলেন, আপনি আইনজীবী না রেখে থাকলে আপনারটা শুনবো। আপনার মামলার নম্বর দিয়ে যান। পরে আদালত কার্যতালিকা অনুসারে শুনানি শুরু করেন।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email
Share on telegram
Telegram
Share on skype
Skype