
নিজস্ব প্রতিবেদক : ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব) করোনা মোকাবিলায় আসন্ন ২০২১-২২ বাজেটে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে। নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
২৯ মে (শনিবার) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এই দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাত হলো নির্মাণ খাত। এই খাতে দেশে প্রায় ৪০ লাখ নির্মাণ শ্রমিক কাজ করছে। প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও রয়েছেন আমাদের দেশের সমপরিমাণ নির্মাণ শ্রমিক।
দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে নিরবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন আমাদের দেশের নির্মাণ শ্রমিকরা। প্রবাসী নির্মাণ শ্রমিকরাও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে সমানভাবে ভূমিকা রেখে চলেছেন।
কিন্তু যাদের শ্রমে ঘামে জাতীয় অর্থনীতি বিকশিত হচ্ছে, দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে চলছে সেই নির্মাণ শ্রমিকরা এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে। রাষ্ট্রের কাছে তাদের কাজের তেমন কোনো স্বীকৃতি নেই। নেই তাদের সামাজিক সুরক্ষা।
তারা আরও বলেন, করোনারকালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ। বহু সংখ্যক শ্রমজীবী মানুষ ছাঁটাইয়ের শিকার হচ্ছেন।
প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রায় সব সেক্টরে সাধারণ শ্রমিকদের আয় কমে গেছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের মধ্যে নির্মাণ শ্রমিকরাই সবচাইতে বেশি বঞ্চিত হয়েছে এবং হচ্ছে। এই খাতের শ্রমিকদের বেশিরভাগই দিন আনে দিন খায় ভিত্তিক শ্রমিক।
তাদের উপার্জনের ওপরই তাদের পরিবারের ভরণপোষণ নির্ভর করে। করোনায় শ্রমিকরা কর্মহীন হয়ে ধার দেনায় নিঃস্ব হয়ে পড়া নির্মাণ শ্রমিকরা চলতি মহামারিতে আরও নিঃস্ব হয়ে ভিটেমাটি বিক্রির আশঙ্কায় দিন গুনছেন।
দেশের অর্থনীতির স্বার্থে, শিল্পের স্বার্থে, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থে সরকারি উদ্যোগে ভর্তুকি দিয়ে নির্মাণ শিল্প টিকিয়ে রাখা প্রয়োজন।
বক্তারা দাবি জানিয়ে বলেন, কোভিড মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে সীমিত আকারে প্রণোদনাসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ও প্রণোদনা ক্ষতিগ্রস্ত এই বিশাল শ্রমগোষ্ঠির জন্য কোনভাবেই যথেষ্ট নয়।
তাই আসন্ন ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য নগদ প্রণোদনা পেনশন স্কিম, রেশনিং ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের খাদ্য-সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য করোনা টেস্ট, করোনা টিকা, আইসোলেশন ও যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। বিদেশ ফেরত শ্রমিকদের সহজ কিস্তিতে লোন দিয়ে বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।