এমডি নিজাম উদ্দীন । প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম -২৪ জুন -২০২০ ইংরেজী।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়িত কার্যক্রম নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষের উন্নয়নে কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, ইউএনডিপি ও ইউকে এইডের সহায়তাপুষ্ট নগরীর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প সব সময়েই নগরের ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের পাশে থেকে কাজ করছে এবং করবে। তিনি ধৈর্যশীলতার সহিত কোভিড-১৯ দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য এবং প্রত্যেককে মাস্ক পরিধান করে ও সঠিক দুরত্ব বজায় রেখে কাজ করার আহŸান জানান। তিনি আরো বলেন যে, এই প্রকল্পের আওতায় খুব শীঘ্রই আরো দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ন মানুষকে জরুরি খাদ্য সহায়তার জন্য নগদ অর্থ সহায়তা দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। মেয়র বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি মানুষের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিপর্যস্থ করে চলেছে। বাধ্যতামূলক ছুটির কারণে অর্থনীতির গতি নিম্নমুখী। স্বল্প আয়ের এবং শ্রমঘন প্রতিষ্ঠানে চাকরির সঙ্গে যুক্তরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগস্থ। এসব চাকরির বড় অংশই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে যুক্ত। বলা যায়, এ সব খাতের কর্মজীবী ও উদ্যোক্তা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত। অর্থনীতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলে তাদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বর্ধিত বেকারত্ব ও মৌলিক প্রয়োজন যথাযথ মেটাতে না পারার কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীতে নতুন একটি ধারা যুক্ত করবে, যাদের ‘নব্য দরিদ্র’ হিসেবে অভিহিত করা যায়। কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলার কারণে উপার্জন হারিয়ে তারা দারিদ্র সীমার নিচে চলে এসেছে। তাই সরকারের নীতিনির্ধারকরা আর্থিক প্রণোদনা ও খাদ্য সহায়তার সমন্বয়ে একটি প্যাকেজ ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে। কর্মসংস্থানবিহীন পুনরুদ্ধার গত এক দশকে অর্জিত আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিকে চরম ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কর্মহারানো পরিবারের ছেলে-মেয়েদের লেখ-পড়ার খরচ চালানো বড়ই কষ্টকর। এমনকি ঝরে পড়তে পারে অনেক শিক্ষার্থী। তাই কোভিড-১৯ দূর্যোগকালীন সময়ে ইউএনডিপি ইউকে-এইড এর সহায়তায় প্রান্তিক জনগোষ্টি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বাঁচিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। আজ বুধবার দুপুরে চসিক সম্মেলন কক্ষে ইউএনডিপি ইউকে-এইড এর সহায়তায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রান্তিক জনগোষ্টি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে নগদ অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন। আজ প্রদত্ত প্রতিজনকে ৩ হাজার ৩ শত ৩৭ জন শিক্ষার্থীর মাঝে ২০২০ সালের দ্বিতীয় দফা অনুদান হিসেবে ৮২ লক্ষ ৯৫ হাজার ৩০০ টাকা ১ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত যাদের মধ্যে ৮৬৮ জন ছেলে এবং ২৫৩৬ জন মেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ অনুদান বিতরণ করা হয়। এই অর্থ সহায়তা উপকারভোগীদের মোবাইল একাউন্টে পৌঁছে যাবে। অনুষ্ঠানে কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের টাউন ম্যানেজার মো. সারোয়ার হোসেন খান, সোসিও ইকোনমিক ও নিউট্রিশন এক্সপার্ট মোহাম্মদ হানিফ, টাউন ফেডারেশন এর চেয়ারপার্সন কোহিনুর আক্তারসহ এলআইইউপিসি প্রকল্পের কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য প্রান্তিকজনগোষ্টির জীবন মান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ইতোমধ্যে ৮৪ হাজার পরিবারের মাঝে ৫ টি করে প্রায় ৪ লক্ষ ২৩ হাজার সাবান, ৩৬৪ সিডিসিতে ৩৮৪টি হাত ধোয়ার পয়েন্ট স্থাপন, কয়েকটি এতিমখানায় হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে দেয়া হয়েছে ৪৫ হাজার সাবান। এছাড়াও গর্ভবতী মায়েদের জন্য ১ হাজার দিনের জরুরী পুষ্টি খাদ্য সহায়তায় ১ হাজার ৬শ ৭৪ জন গর্ভবর্তী মাকে মাসিক জরুরী খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।