করোনা উপসর্গ রোগীরা পাবে নবগঠিত চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা
নির্ধারিত হটলাইনে কল করলেই ডাক্তার, নার্স, ব্রাদার, টেকনেশিয়ানসহ এবং স্বাস্থ্যকর্মীর সমন্বয়ে মোবাইল টিম অক্সিজেন সহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স সহ ছুটে যাবে রোগীর বাসায়। পোর্টেবল এক্স-রে মেশিন দিয়ে দ্রুত পরীক্ষা করা হবে রোগীর অবস্থা। রিপোর্ট ভালো আসলে দেয়া হবে ঔষধ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ। আর রিপোর্ট খারাপ আসলে এবং সংকটাপন্ন রোগীদের জন্য সিট খালি থাকলে তারা সাথে করে নিয়ে এসে ভর্তি করাবেন হাসপাতালে। অথবা অন্য হাসপাতালে ভর্তির জন্য পরামর্শ দিবেন।
গত বছর করোনা কালীন মহামারীর সময় প্রাথমিক অবস্থায় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা ওয়ার্ড চালু করার পর এবার দ্বিতীয় তরঙ্গে করোনা উপসর্গের রোগীদের জন্য এমনই একটি ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাসেবা চালু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের মা ও শিশু হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদ।
গত বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) দুপুরে মা ও শিশু হাসপাতাল করোনা ম্যানেজমেন্ট এবং করোনা ট্রিটমেন্ট কমিটির যৌথ সভা কমিটির চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই সেবা চালু করার বিষয়টি সভায় উপস্থাপন করেন কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি আলহাজ্ব মোঃ রেজাউল করিম আজাদ এবং পরবর্তীতে পরিচালনা পরিষদের ৪৬৪ তম সভায় এই সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় এবং মোবাইল টিমে ব্যবহারের জন্য খুলশী ক্লাব থেকে প্রাপ্ত ডুয়েল এসি হাইজ অ্যাম্বুলেন্সটি বরাদ্দ দেওয়া হয়।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এই সেবা চালু হবে। এর জন্য ৪টি ফোন নম্বর দেয়া হবে। ইতোমধ্যে চিকিৎসক নিয়োগ ছাড়া বাকি কাজ প্রায় শেষের পথে। অন্যান্য নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলেই তা চালু করা হবে। যা ২৪ ঘণ্টায় চালু থাকবে।
বর্তমানে মা ও শিশু হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ১০০টি শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট) শয্যা, ৩০টি ক্যাবিন ও বাকিগুলো সাধারণ শয্যা। এর সাথে আরও ৩০টি আইসোলেশন শয্যা চালু করা হচ্ছে।
পরিচালনা পরিষদের প্রেসিডেন্ট ইনচার্জ আলহাজ্ব এস এম মোরশেদ হোসেন বলেন,
আমরা মানবিক দিক বিবেচনা করে এই সেবা চালু করতে যাচ্ছি। খুব সামান্য খরচেই এই সেবা দেয়া হবে।
এ বিষয়ে মা ও শিশু হাসপাতাল পরিচালনা পরিষদের ট্রেজারার আলহাজ্ব রেজাউল করিম আজাদ বলেন, গতবছর করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমরা ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করি। কিন্তু সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ হার আবার বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে কোন বেড খালি নেই। অনেক রোগী এসে ফিরে যাচ্ছে। তাই আমরা এবার ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা চালু করতে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল করোনা ইউনিট বাস্তবায়ন কমিটির প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জাবেদ আবছার চৌধুরী বলেন, ‘গতবছর করোনা সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখি থাকার সময় চট্টগ্রামের মানুষ যখন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছিল না, তখন আমরা নিজেরা এগিয়ে এসে ১০০ শয্যার করোনা ইউনিট চালু করি। ইতোমধ্যে আমরা এই ইউনিটে ৪ হাজারের অধিক রোগীকে সেবা দিয়েছি। বর্তমানে আমাদের এই করোনা ইউনিটে ভেন্টিলেটর, লাইফ সাপোর্ট সহ পর্যাপ্ত হাই ফ্লো ন্যাজল ক্যানুলা রয়েছে। পাশাপাশি এই ইউনিট মেডিসিন বিভাগের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। বর্তমানে করোনার প্রকোপ আবার বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা করোনা রোগীর উপছে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। রোগীরা যাতে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় তাই আমরা এবার বিকল্প উপায়ে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা সেবা দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, এতে করে রোগীরা হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করে হয়রানি হওয়া থেকে যেমন রক্ষা পাবে, তেমনি স্বল্প খরচে ভালো মানের সেবাও পাবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: প্রকৌশলী দিলু বড়ুয়া । সম্পাদকীয় কার্যালয়: ৯২ মোমিন রোড, শাহ্ আনিছ মসজিদ মার্কেট(৪র্থ তলা), জিপিও, কোতোয়ালী, চট্টগ্রাম। যোগাযোগ: ইমেল: [email protected], মোবাইলঃ ০১৮৫১০৭১১৭০
Copyright © 2025 ইতিহাস ৭১ টিভি. All rights reserved.