রামগড় উপজেলা প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ির রামগড় পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্রে স্কুল শিক্ষিকার বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার(৯ সেপ্টেম্বর) ভোররাতে রামগড় থানার অদূরে বাজার আবাসিক এলাকায় প্রাইমারি স্কুল শিক্ষিকা শিলু বড়ুয়ার বাড়িতে এ ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত হয়। ধারালো অস্ত্রধারি ডাকাতরা শিলু বড়ুয়া ও তার স্বামী উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের স্বাস্থ্য সহকারী রুবেল কান্তি বড়ুয়াকে অস্ত্রেরমুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ইত্যাদি লুন্ঠন করে নিয়ে যায়।
রুবেল বড়ুয়া জানান, শুক্রবার রাত আনুমানিক ৩টার দিকে ডাকাতরা রামগড় জাবালে নুর মহিলা মাদ্রাসার পাশে তার নিজস্ব বাসভবনের পিছনের লোহার দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। এসময় বাসার সবাই গভীর ঘুমে ছিল। ডাকাতরা প্রথমে ঘরে ঢুকে তার বেড রুমের দরজা লক করে পাশের বেড রুমে যায়। ঐ বেড রুমে তার স্ত্রী ও ৮ বছরের শিশুপুত্র ঘুমাচ্ছিল। ডাকাতরা ঘরের লাইট অন করলে শিলু বড়ুয়ার ঘুম ভেঙ্গে যায়। হঠাৎ জেগে ডাকাতদের দেখামাত্রই তিনি চিৎকার দেন। এসময় ডাকাতদের একজন ধারালো কিরিচ গলায় ধরে গৃহকর্তীকে জিম্মি করে। জোরপূর্বক চাবি নিয়ে আলমিরা, অবারড্রব ইত্যাদি খুলে স্বর্ণালংকার, টাকা পয়সা খুজতে থাকে। পরে তারা অস্ত্রের মুখে স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে সাথে নিয়ে গৃহর্কতার বেড রুমে হানা দেয়। ডাকাতরা ঐ রুমে ঢুকে রুবেল বড়ুয়া ও তার স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে জিম্মি করে ঐ রুমের আলমিরা, অবারড্রব খুলে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ইত্যাদি লুন্ঠন করে নেয়। রুবেল বড়ুয়া বলেন, ডাকাতরা মুখোশপড়া ছিল। শনিবার ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘন্টা যাবৎ তান্ডব চালায়। তিনি আরও বলেন, ডাকাতরদর কাছে তার মৃত মায়ের স্মৃতি চিহ্ন সোনার কানের পাশা ফেরৎ দেয়ার আকুতি-মিনতি জানালে ডাকাতদলের সর্দার দুই টাকার একটি কাগজের নোট তার মুখে ছুঁড়ে মারে। তিনি আরও বলেন, ডাকাতরা তাদের সবাইকে একটি রুমে আটকিয়ে রেখে পিছনের দরজা দিয়েই চলে যায়। চলে যাওয়ার আগে ডাকাতির কথা পুলিশ বা অন্য কাউকে জানালে দিনে-দুপুরে এসে সবাইকে জবাই করে হত্যার হুমকী দিয়ে যায়।
এদিকে, পৌরসভার প্রাণকেন্দ্রে এ দুর্ধর্ষ ডাকাতির খবর প্রকাশ হলে ঐ আবাসিক এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতংক দেখা দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ এলাকার একজন বাড়ির মালিক বলেন, থানা থেকে মাত্র ৩-৪শ গজের মধ্যে এই ডাকাতির ঘটনায় তারা সকলেই ভীতসন্ত্রস্ত। নিরাপত্তা নিয়ে তারা সন্ধিহান।
এ ব্যাপারে রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়। পরে তিনি নিজেই সরেজমিনে পরির্দশনে যান। তিনি বলেন, বাড়ির মালিক এখনও থানায় লিখিত অভিযোগ বা মামলা করেননি। তথাপিও পুলিশ দুর্বৃত্তদের ধরতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তৎপরতা শুরু করেছেন।