ইতিহাস৭১ডেস্ক: জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দ্বাদশ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে নীরবে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ক্ষেত্রে ২০২৩ সালের নভেম্বরে তফসিল ঘোষণা হতে পারে। তবে সংসদ নির্বাচনের আগেই আগামী বছরের মাঝামাঝি পাঁচ সিটি তথা গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন করতে হবে কমিশনকে।
ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দুই ধরনের পরিকল্পনা থাকবে ইসির। প্রথমত, আগামী বছর নভেম্বরের মাঝামাঝি তফসিল দিয়ে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ভোট গ্রহণ। দ্বিতীয়ত, আগামী বছর নভেম্বরের শুরুতে তফসিল দিয়ে ডিসেম্বরের শেষ দিকে ভোট অনুষ্ঠান। এ ক্ষেত্রে আগামী মাসে তথা সেপ্টেম্বরে রোডম্যাপ ঘোষণা হলে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইসির হাতে ১৫ মাস সময় থাকবে। এ ছাড়া পাঁচ সিটি নির্বাচন আগামী বছরের মাঝামাঝি হতে পারে। কেননা আইন অনুযায়ী ২০২৩ সালের নভেম্বরের মধ্যে এ পাঁচ সিটির মেয়াদ শেষ হবে।
এদিকে নীরবেই এগিয়ে চলেছে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজ। নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রথম দফায় নির্বাচনী সংলাপ শেষ করেছে; গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের খসড়া প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে; চলছে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ; নতুন দল নিবন্ধনে দরখাস্ত আহ্বান। এ ছাড়া আগামী মাসে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে। অবশ্য সিইসিসহ অন্যান্য নির্বাচন কমিশনের টেবিলে রোডম্যাপের খসড়া পৌঁছে গেছে। তারাও রোডম্যাপের খসড়া চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। নির্বাচন কমিশন অনুমোদন করলেই সেপ্টেম্বরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নীরবে চলছে। নির্বাচন কমিশনাররা সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে নানা নির্দেশনা দিচ্ছেন। ভোটের খরচ কেমন হতে পারে সে বিষয়ে হিসাব-নিকাশ করা হচ্ছে। প্রায় ১০০ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি রাখছে ইসি। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আর প্রথম সংসদ অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ প্রথম অধিবেশন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। সে হিসেবে ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বর্তমান সংসদের মেয়াদ। নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সংবিধানে সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের কথা বলা হয়েছে। সে হিসেবে ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আসছে নির্বাচনী রোডম্যাপ : সেপ্টেম্বরে নির্বাচনী রোডম্যাপের খসড়া প্রকাশ করবে ইসি। এরপর তা নিয়ে আবারও অক্টোবরে রাজনৈতিক দল, সুশীলসমাজসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে সংলাপ বা ওয়ার্কশপ করবে নির্বাচন কমিশন। পরে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সে রোডম্যাপ চূড়ান্ত করা হবে। এবারের নির্বাচনী রোডম্যাপে অগ্রাধিকার পাচ্ছে নির্বাচনী আইন সংস্কার, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কার্যকর পন্থা, কত আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার হবে এবং ইভিএমে পেপার ট্রেইল তথা ভোটার ভেরিয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল (ভিভিপিএটি) যুক্ত করা হবে কি না এসব বিষয়। এ ছাড়া সংসদীয় আসনের সীমনা নির্ধারণের কাজ আগামী বছর জুনের মধ্যে এবং রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের কাজ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করার টার্গেট থাকবে রোডম্যাপে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠানের টার্গেট নিয়ে ‘রোডম্যাপ’ প্রস্তুত করা হচ্ছে। চলতি বছরের ১৭ থেকে ৩১ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনী সংলাপে প্রাপ্ত সুপারিশ খসড়া রোডম্যাপে স্থান পাচ্ছে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, রোডম্যাপ ঘোষণার আগেই বর্তমান ইসি কিছু কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন দিতে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। আগস্টের মধ্যে দল নিবন্ধনের আবেদন করতে হবে। এ ছাড়া জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু করবে ইসি। তবে ৩০০ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের কার্যক্রম আগামী জানুয়ারির মধ্যে শুরু করার চিন্তা করছে ইসি। আর শেষ করার টার্গেট রাখা হচ্ছে জুনের মধ্যে। ২৬ মে ইসি নতুন দলের নিবন্ধন আহ্বান-সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ইসিতে দল নিবন্ধনের আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আগামী বছর জুলাইর মধ্যে নতুন দলের নিবন্ধন-সংক্রান্ত কাজ শেষ করতে চায় সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানটি। আগামী সংসদ নির্বাচনে ১০০ আসনে ইভিএমে ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: প্রকৌশলী দিলু বড়ুয়া । সম্পাদকীয় কার্যালয়: ৯২ মোমিন রোড, শাহ্ আনিছ মসজিদ মার্কেট(৪র্থ তলা), জিপিও, কোতোয়ালী, চট্টগ্রাম। যোগাযোগ: ইমেল: [email protected], মোবাইলঃ ০১৮৫১০৭১১৭০
Copyright © 2025 ইতিহাস ৭১ টিভি. All rights reserved.