
সচেতন নাগরিকদের করণীয়”-শীর্ষক আলোচনা সভা প্রতিবাদ, প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করতে হবে “সাম্প্রদায়িকতার শেষ কোথায় ? সচেতন নাগরিকদের করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, চলমান সাম্প্রদায়িকতার শেষ চাইলে আপোষ করার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
নিজেকে অসাম্প্রদায়িক দাবি করবেন, তলে তলে আপোষ করবেন-এমন নীতিতে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ কোনভাবেই সম্ভব নয়। সচেতন নাগরিকদের দায়িত্ব হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাহসী হয়ে প্রতিবাদটুকু অন্তত করা। প্রতিবাদ, প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন করতে হবে। আপোষহীন হতে হবে সর্বত্র। ১৯৯৪ সালে ২৬ জুলাই নরঘাতক গোলাম আযম প্রতিরোধ আন্দোলনে শহীদদের যথাযোগ্য মর্যাদায় স্মরণকল্পে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ২৬ জুলাই (মঙ্গলবার) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি চট্টগ্রাম জেলা আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা উপর্যুক্ত কথা বলেন। সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদারের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক লেখক-সাংবাদিক শওকত বাঙালি। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ, কবি-গবেষক কমলেশ দাশগুপ্ত। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম জাবেদুল আলম সুমনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন- জাতীয় মহিলা শ্রমিকলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সংগঠনের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রুবা আহসান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ আচার্য্য, মুক্তিযোদ্ধা ছাত্র কমান্ডের সদস্য সচিব কাজী মুহাম্মদ রাজিশ ইমরান, সংগঠনের জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক আবু সাদাত মো. সায়েম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক চৌধুরী, সুমন চৌধুরী, মিথুন মল্লিক, অ্যাডভোকেট মো. সাহাব উদ্দিন, অসিত বরণ বিশ্বাস, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সূচিত্রা গুহ টুম্পা, সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আলাউদ্দিন বাবু, সহ-প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক রুবেল চৌধুরী, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাহাদাত নবী খোকা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রাজীব চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য আখতার হোসেন, মুক্তা হাওলাদার, আকিব জাবেদ, আলোকচিত্রি মো. আসিফ ইকবাল, সজল দাশ, জান্নাতুল ফেরদৌস রুবি, মুক্তা আহামেদ, কামরুন নাহার, ইয়াছমিন, জয়নুদ্দীন আহমেদ জয়, শামীম হাছান আরফাত, মো. জামাল উদ্দীন, রিপন বড়–য়া, সাজ্জাদ শাকিল, আবু ইউছুপ, মো. ফয়েজ, মো. লুৎফর রহমান জুয়েল, কামরুল আলম মিন্টু, তানিয়া কামাল, রুনা মোস্তাক, শারমিন আক্তার, সেলিনা, রিমা আক্তার, মরিয়ম, শাহনাজ, আয়েশা সিদ্দিকা, জয়া সিংহ, জেসমিন, রিনা বেগম, উর্মি, রিয়া, কোহিনুর আক্তার, নাঈম আশরাফ অভি, ইরফানুল হক বাপ্পী, সালাউদ্দিন মুন্না, ফারদিন চৌধুরী সাকিব, তন্ময় চৌধুরী, জেসমিন আক্তার, আলেয়া বেগম, বাঁশখালী থানার শাখার আহ্বায়ক শেখর দত্ত, সদস্য সচিব আজমীরুল ইসলাম, বায়েজিদ থানা শাখার আবু তৈয়ব সোহেল, কাজী মুহাম্মদ রোকনুজ্জামান প্রমুখ।
প্রধান আলোচক মফিজুর রহমান বলেন, ’৯৪ সালের ২৬ জুলাই গোলাম আযমকে প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম যে সাহসী অধ্যায় রচনা করেছিলো তারই ফলশ্রুতিতে জীবদ্দশায় গোলাম আযম আর কোথাও কোন জনসভায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। চট্টগ্রাম থেকে তাকে বিতারণে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তি যে ভূমিকা রেখেছিলো জাতীয় রাজনীতিতে এই সাহসী অধ্যায় অনুকরণীয় হয়েছিলো। ২৬ জুলাই ঘাতক বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করে শওকত বাঙালি বলেন, গোলামকে প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে যে শুভ সূচনা চট্টগ্রাম করেছিলো পরবর্তীতে যুদ্ধাপরাধ বিরোধী আন্দোলনে এটি অনুপ্রেরণ যুগিয়েছিলো। একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত নির্মূল কমিটির আন্দোলন চলমান থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দীর্ঘ ৩০ বছরের ধারাবাহিক আন্দোলনের ফসল শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।
সভাপতির বক্তব্যে প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, যুদ্ধাপরাধী এবং তাদের শিষ্যদের রাজাকারী চেতনা নিশ্চিহ্ন করার মধ্য দিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ নির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। বিকেল ৪টায় নগরীর চৈতন্য গলি কবরস্থানে শহীদদের স্মরণে শহীদ এহসানুল হক মনির কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ এবং সভার শুরুতে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।